শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
ProdhanKhabor | Popular NewsPaper of Bangladesh
শুক্রবার ১৮ এপ্রিল ২০২৫ ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
দাউদকান্দির বানিয়াপাড়ায় গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ নকলের দায়ে দাউদকান্দিতে দুই এসএসসি পরীক্ষার্থী বহিস্কার আগামী ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে প্রতিভা প্রকাশ লেখক সম্মিলন ২০২৫ আগামী ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে প্রতিভা প্রকাশ লেখক সম্মিলন ২০২৫ বিনামূল্যে সার ও বীজ পেলো দাউদকান্দির ৪০০ কৃষক" দাউদকান্দিতে মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে ভুক্তভোগীদের মানববন্ধন মাছের প্রজেক্টগুলোতে চাঁদা ও দখলবাজি চলবে না: খন্দকার মারুফ হোসেন বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সময়োপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হবে: খন্দকার মারুফ হোসেন আমার সর্বোচ্চ চিন্তা চেতনা দিয়ে শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করবো : আব্দুস সাত্তার অসহায় মানুষের মাঝে অ্যাকাউন্টেন্স ক্লাবের ঈদ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ দাউদকান্দি পৌরসভায় অনলাইন সনদ বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন দাউদকান্দি পৌরসভা জামায়াতে ইসলামীর ৫নং ওয়ার্ড কমিটি গঠন নতজানু ও দলকানা সাংবাদিকতা ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটায়: কাদের গণি চৌধুরী ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের কমিটিতে মনির আহ্বায়ক ও সোহেল সদস্য পূর্বনোয়াদ্দা ইসলামী পাঠাগার ও সমাজ কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ প্রদান দাউদকান্দিতে ৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টায় ৬৫ বছরের বৃদ্ধ গ্রেফতার ঈদের ছুটিতেও চান্দিনায় পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে সকল সেবা চলমান টিআরসি নিয়োগে দালালমুক্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় হবে: এসপি ব্রাহ্মণবাড়িয়া দাউদকান্দির চক্রতলা গ্রামে জুস দিয়ে পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার ১ ব্রাহ্মণবাড়িয়া রিপোর্টার্স ক্লাবের উদ্যোগে সাংবাদিকদের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ
দাউদকান্দির পুটিয়া গ্রামের তরুণ হোসাইনের

"সখের ঘটিতে খেজুরের রসের চাহিদা মিটছে"

"সখের ঘটিতে খেজুরের রসের চাহিদা মিটছে"
"তিন বছর আগের কথা। এক গাছি খেজুর গাছ পরিস্কার করতে আসে হোসাইনদের গ্রামে। তখন সে আরো ছোট ছিলো। গাছের নীচে দাড়িয়ে মনোযোগ দিয়ে তা দেখছে। সে এতে আকৃষ্ট হয় এবং গাছিকে বলে তাকে এটা শিখানোর জন্য। গাছি তখন খেজুর গাছ পরিস্কার ও রস সংগ্রহের পদ্ধতি শিখিয়ে দেয় তাকে।

তারপর থেকে ৩ বছর ধরে নিজেদের দুইটি গাছে প্রতি বছর ঘটি দেয় হোসাইন। এতে তাদের পরিবারে খেজুরের রসের চাহিদা মিটছে। আত্মীয় স্বজনের বাসায় পাঠাচ্ছে । বন্ধুরাও রস ক্ষেতে আসে। বিক্রি করতে না চাইলেও অনেকে কিনে নেয়।

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের পুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসাইন। বয়স ১৯। বাবা নেই। দুই ভাই দুই বোন। মা, দাদা-দাদী চাচারা আছে। যৌথ পরিবারে বসবাস। সে স্থানীয় সিঙ্গুলা ইসলামিয়া ডিগ্রি মাদরাসা থেকে ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী।

জানা যায়, শীত আসলেই দুইটি খেজুর গাছ পরিস্কার করে রস সংগ্রহের জন্য প্রস্তুত করে হোসাইন। প্রতিদিন বিকেলে দুটি গাছে ঘটি দেয়। সকালে ঘটি নামালে ৪ থেকে ৫ কেজি রস সংগ্রহ হয়। আর শীত বেশি পরলে ৫ থেকে ৮ কেজি পর্যন্ত রস সংগ্রহ করা যায়।

বছরে ৩ মাস রস সংগ্রহ করে। এই বছর একমাস ধরে রস সংগ্রহ করছে। আগামী দের থেকে দুই মাস রস সংগ্রহ করা যাবে বলে জানান। যৌথ বড় পরিবার তাদের। এছাড়াও আত্মীয় স্বজনরা রস নেয়। তাই রস বিক্রির তেমন তাগিদ নেই হোসাইনের।

তবে, অনেকে রস নিতে আগ্রহ প্রকাশ করায় মাঝে মধ্যে বিক্রি করে। লিটার প্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা। এতে তার কিছু টাকা হাতে আসে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হোসাইন তখন গাছে ঘটি বসাচ্ছে।

দাদী সাজেদা বেগম নীচে দাড়িয়ে আছে। তিনি বলেন, সে আমার বড় ছেলের নাতি। আমার নাতি তিন বছর ধরে এই দুইটা গাছে ঘটি দেয়। গাছ থেকে পাওয়া রস আমার ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনিদের নিয়ে খাই। একসময় অনেক রস পাওয়া যেতো। এখন তেমন নাই।

মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, তিন বছর আগে এক গাছি আমাকে একবার দেখাইয়া দেয়। তারপর থেকে আমি নিজেই গাছে ঘটি দেই। শীতকাল আসলেই খেজুরের রস নিয়ে আমাদের ভাবতে হয় না। দুটি গাছ থেকে সংগ্রহ হওয়া রস আমাদের পরিবারের চাহিদা মিটায়। আমার বন্ধুরা আসে তাদেরকে আমি রস দেই। আমি এতে আনন্দিত। আলহামদুলিল্লাহ আমার দুইটি গাছের রস অনেক মিস্টি। ক্ষেতেও সুস্বাদু।

দাদা বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমার নাতি সখ করে গাছে ঘটি দিয়েছিলো। তার সখের ঘটি এখন আমাদের চাহিদা পূরণ করছে। খেজুরের রস আমাদের গ্রামীন ঐতিহ্য। এটা সংগ্রহ ব্যবস্থা আমাদের ধরে রাখতে হবে।

ঐ ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামের বাসিন্দা এআইপি (এগ্রিকালচার ইমপর্টেন্ট পার্সন) মতিন সৈকত বলেন, একটা সময় ছিলো। শীতকাল আসলে গ্রামে ভিন্ন রকমের আমেজ বিরাজ করতো। খেজুরের রসের গুর তৈরী হতো। সেই গুর দিয়ে নানান রকম পিঠা বানানো হতো।আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে পাঠানো হতো। রসের সিন্নি তৈরী করা হতো।

এখন তা নেই বললেই চলে। খেজুর গাছ থাকলেও রস সংগ্রহ করার গাছি নেই। তাই আমাদের ঐতিহ্যবাহি সুস্বাদু এই খাবারটি বিলুপ্তির পথে। হোসাইন আমাদের জন্য অনুকরণীয়। তার মতো গ্রামে গ্রামে রস সংগ্রহে আগ্রহী তরুণ থাকলে। রসের চাহিদা মিটতো এবং এই প্রজন্ম এর স্বাদ নিতে পারতো। ঐতিহ্য না হারিয়ে, বেঁচে থাকতো।

পিকে/এসপি
দাউদকান্দির বানিয়াপাড়ায় গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

দাউদকান্দির বানিয়াপাড়ায় গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ